ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের ডামাডোলে যেন হারিয়ে গিয়েছিল গাজায় তেল আবিবের আগ্রাসনের বিষয়টি। তবে ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের মধ্যেও থেমে থাকেনি আগ্রাসন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানাচ্ছে, গতকাল শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ফিলিস্তিনি অঞ্চলটিতে ইসরায়েলি আগ্রাসনে নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়িয়েছে।
এদিকে, পশ্চিম তীরে অভিযানের নামে ‘ধ্বংসযজ্ঞ’ চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এছাড়া দক্ষিণ গাজার রাফাহ ও তার আশপাশের এলাকায় আরও সৈন্য মোতায়েন করেছে ইসরাইল। গত ২৪ ঘন্টায় রাফাহ এলাকার এক আবাসিক বাড়িতে ইসরাইলি হামলায় নারী ও শিশুসহ আটজন নিহত হয়েছেন।
গত ৭ই অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় ইসরাইলি হামলায় ফিলিস্তিনে নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়িয়েছে। নিহতদেও বেশিরভাগ নারী ও শিশু। গাজায় আহত মানুষের সংখ্যা ৭৬ হাজার ছাড়িয়েছে।
নিহতদের মধ্যে ১৩ হাজার ৮০০-এরও বেশি শিশু এবং নারী ৮ হাজার ৪০০ জন। এ ছাড়া, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের শিকার হয়ে এখনো নিখোঁজ ৮ হাজারের বেশি। এর বাইরে ফিলিস্তিনি অপর ভূখণ্ড পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সেনাদের হাতে অন্তত ৪৮৬ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও অন্তত ৪ হাজার ৮০০ জন। নিহতদের মধ্যে ১২০ জনই শিশু।
এদিকে, স্থানীয় সময় আজ শনিবার ভোরের দিকে গাজার দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত রাফাহে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত আটজন নিহত হয়েছে। নিহতদের অধিকাংশই শিশু। রাফাহের একটি আবাসিক ভবনে হামলার ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া রাফাহে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করেছে ইসরায়েল। এর ফলে রাফাহের অধিকাংশ কৃষিজমিই নষ্ট হয়ে গেছে।
অন্যদিকে, পশ্চিম তীরের তুলকারেমের নূর শামস শরণার্থীশিবিরে অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েল। এ নিয়ে দ্বিতীয় দিন চলছে দেশটির সেনাদের অভিযান। এই অভিযানে এক কিশোরসহ অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছে।
ইসরায়েলি বাহিনী শরণার্থীশিবিরটিতে আক্ষরিক অর্থেই ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে বলে উল্লেখ করেছেন আল-জাজিরার পশ্চিম তীর প্রতিনিধি। তিনি এই ধ্বংসযজ্ঞকে ‘কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েল বাহিনী গভীর রাতে অধিকৃত পশ্চিম তীরের তুলকারেমের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত নূর শামস শরণার্থীশিবিরে অভিযান শুরু করে। টানা ১২ ঘণ্টার অভিযান শেষে শুক্রবার সকালে ইসরায়েলি বাহিনী বুলডোজার ব্যবহার করে রাস্তা, দোকানপাট ও আবাসিক বাড়িঘর ধ্বংস করে।
ইহুদিবাদী রাষ্ট্রটির প্রতিরক্ষাবাহিনী নূর শামস শরণার্থীশিবিরে পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থাও বিধ্বস্ত করে দিয়েছে। আজ শনিবার ভোর পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনী নূর শামসে অভিযান অব্যাহত রেখেছে এবং ফিলিস্তিনি যোদ্ধারাও ইসরায়েলিদের ঠেকাতে সশস্ত্র প্রতিরোধ অব্যাহত রেখেছে।